বলা হয়, তার পেছন কেন খাড়া তার বংশবলীর ধারা। আজকের যা পরিস্থিতি সেটা বোঝানোর জন্য এর থেকে ভালো প্রবাদবাক্য আর কিছু হতে পারে না। এই প্রবাদটি যেন
West Bengal School Service Commission (WBSSC) চাকরি দুর্নীতির কেলেঙ্কারির সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়। ২০১৬ সালের State Level Selection Test (SLST) থেকে শুরু হওয়া এই দুর্নীতির জাল এতটাই বিস্তৃত যে, এতে
তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) নেতাদের পরিবারের সদস্যরা পর্যন্ত জড়িয়ে পড়েছে। শেষ পর্যন্ত এদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও, যদি কিছু থাকে আরও কিছু উপর চালাকি, আরও কিছু অস্বচ্ছতা, আরও কিছু করে যদি দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়া যায়, লুকানো যায়—সেই চেষ্টা এখনও পর্যন্ত করা হচ্ছে। একেবারে গন্ডারের চামড়ার মতো অবস্থা: মানুষজন গালিগালাজ করছেন, আদালতের তরফ থেকে থাপ্পড় মারা হচ্ছে এই বলে যে আপনাদের কি লজ্জাশরম কিছুই নেই? আপনাদের তো আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, কিন্তু তারপরেও কিছু যায় আসে না। মনোভাবটা এরকম যে, আমাদের যে যা বলছে বলুক, আমাদের তো যা করার আমরা করেই যাব। আমরা এইসবই করব, আমরা এটাই করব।
 |
চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলনের মাঝে WBSSC ‘দূষিত’ ও ‘অদূষিত’ প্রার্থীর তালিকা শিক্ষাদপ্তরে পাঠাল।
|
বিষয়টা আপনারা সকলেই জানেন। ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের যে মামলা সুপ্রিম কোর্টে চলছে, সেখানে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে আমাদের রাজ্যকে বলা হয়েছে যে আপনারা এই অযোগ্যদের তালিকা বিশেষ করে WBSSC কমিশনকে বলা হয়েছে যে আপনারা অযোগ্যদের তালিকা,
দাগী (WBSSC SLST Tainted Candidates List in West Bengal) একেবারে পরিচিত যারা একেবারে চিহ্নিত দাগী হিসেবে হয়েছে, তাদের নামের তালিকাটা কেন প্রকাশ করছেন না? সেই তালিকা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে তো সুপ্রিম কোর্ট কোনো বাধা দেয়নি।
হাইকোর্টের সেই নির্দেশের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট বিন্দুমাত্র কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। তাহলে সেই তালিকা আপনারা কেন প্রকাশ করছেন না? সাত দিনের মধ্যে আপনাদের এই তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
রাজ্যের তরফ থেকে শটান সেখানে দাঁড়িয়ে বলে দেওয়া হলো সুপ্রিম কোর্টকে যে একদম ঠিক আছে মহামান্য বিচারপতি, আমরা একদম এই তালিকা প্রকাশ করে দেব। ১৯০০ Tainted Candidates List আমাদের কাছে রেডি রয়েছে, আমরা সেই তালিকা প্রকাশ করে দেব। ১৯০০ নামটাই যে গোটা তালিকা সেটাও নয়। তার সঙ্গে আরও নাম রয়েছে এমন কথা উঠে আসছে। কিন্তু রাজ্যের তরফ থেকে Supreme Court দাঁড়িয়ে বলা হলো ১৯০০ নাম আমরা একদম পাবলিশ করে দেব। আপনি আমাদের একটু খালি সময় দিন।
এইবার জানা গেল শনিবার। প্রথমে বলা হলো WBSSC-র তরফ থেকে সকাল সকাল এই নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
Tainted Candidates List প্রকাশ করা হবে। সকাল সকাল থেকে বিষয়টা দুপুর দুপুর হলো, বিকেল বিকেল হলো। তারপর ফাইনালি সন্ধেবেলা গিয়ে এই তালিকা প্রকাশ করা হলো।
দুর্নীতিবাজ দাগীদের তালিকা সামনে এলো। কিন্তু সেখানেও প্রথম থেকেই তামাশা। প্রথমে দেখা গেল একটা লম্বা লিস্ট বেরিয়েছে ৩৩ পাতা। সেখানে প্রচুর পরিমাণে
Tainted Candidates নাম রয়েছে। তার কিছুক্ষণ পরে আবার আলাদা করে আরেকটা লিস্ট বের হলো, যেখানে মাত্র দুটো নাম রয়েছে। তা এই দুজনের নাম আপনারা হঠাৎ আলাদা করে বের করলেন কেন? এই নামগুলো বাকিদের নামের সঙ্গে বের করা গেল না কেন? এই প্রশ্নগুলো কেন ওঠে জানেন তো? কারণ বিশ্বাসের জায়গা তো সম্পূর্ণ হারিয়ে গেছে, এবং এই যে ৩৩ পাতার প্রথম তালিকা তার সঙ্গে আরেকটা তালিকা বের করে আবার দুটো নাম। এই দুটো নামের মধ্যে একটি নাম এরকম রয়েছে যেটি তৃণমূল কংগ্রেসের একজন বিধায়কের কন্যা। চোপড়ার
তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কের মেয়ে
রোশনারা বেগম। তার নাম রয়েছে ওই দুজনের নামের তালিকায়। তাহলে সেই বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কের মেয়ের নামটা লুকানোর জন্যেই কি আলাদা করে বের করা মানে ওটাকে আপনারা বের করতে চাইছিলেন না লুকাতে চাইছিলেন তারপর চাপে পড়ে আবার ওই দুটো নাম আলাদা করে বের করতে হয়েছে এরকম কি কোনো বিষয় রয়েছে?
যাকগে, এবারে এইখানে আরও একটা কান্ড ঘটেছে সেটা হলো এই যে সন্ধেবেলা ফাইনালি তালিকাটা বেরিয়েছে তার আগে একটা তালিকা বের করা হয়েছিল WBSSC-র তরফ থেকে দাগিদের সেই নামের তালিকাটা বের করার সঙ্গে সঙ্গে সেটা আবার এসএসসি উইথড্র করে নেয়, ডিলিট করে দেয় এবং সেই একই টাইম ফ্রেমে জানা যায় যে কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার তিনি অফিসে আবির্ভূত হয়েছেন তিনি সমস্ত আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন সততার প্রতীক দীর্ঘক্ষণ বৈঠক চলে ঘন্টার পর ঘন্টা সেই বৈঠক শেষ হওয়ার পরে ফাইনাল লিস্ট বের হয় তাহলে আপনারা হাতে খড়িটাই করলেন আবারও এই তামাশা দিয়ে আবার একটা জিনিস দিয়ে হঠাৎ করে দুটো নাম কেন আলাদা করে বের করতে হলো প্রথমে একটা তালিকা বের করে সেটাকে আবার কেন আপনারা ডিলিট করে দিলেন এই সমস্ত জিনিসপত্র এত সিরিয়াস এত সিভিয়ার একটা ম্যাটার নিয়ে কেন হচ্ছে? কেউ জানেন না কিন্তু এইসব হচ্ছে। ফাইনালি যে লিস্টটা বেরিয়েছে সেই লিস্টেও এসএসসির ধাপ্পাবাজি দেখুন সেখানে ৩৩ পাতা জুড়ে বা পরে যে দুটো নাম আরও বেরিয়েছে সবটা জুড়ে শুধু নাম আর রোল নম্বর পাতার পর পাতা নাম আর রোল নম্বর সেখানে আর কোন ডিটেলস এই দাগের সম্পর্কে দেওয়া নেই কোন স্কুলে তারা পড়াতেন কোন জায়গায় থাকেন নবম দশম একাদশ দ্বাদশের যে বিভাজন সেটা পর্যন্ত এই তালিকায় করা নেই মানে এই তালিকায় ধরুন নাম রয়েছে এক্স ওয়াই জেড তিনি কোথাকার এক্স ওয়াই জেড সেটাই তালিকা দেখে কিন্তু আপনি বুঝতে পারবেন না এই রকম একটা তালিকা যে এসএসসি বের করেছে কোনো রকম ডিটেলস না দিয়ে সেখানেও এসএসসির তরফ থেকে তিনটে উপর চালাকি করার চেষ্টা করা হয়েছে তিন ধাপে।
প্রথমটা হচ্ছে সুপ্রিমকোর্ট যদি প্রশ্ন করে যে আপনারা তো সবার নাম এখনো বের করেননি। আরও নাম তো বাকি রয়েছে। যেটা প্রথমেই বলছিলাম ১৯০০ নাম রাজ্যের তরফ থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু সেটাই গোটা তালিকা নয়। তার সঙ্গে আরও নাম রয়েছে। এমনটাও বলা হচ্ছে। তো সুপ্রিম কোর্ট যদি প্রশ্ন করে যে আপনারা গোটা তালিকা তো এখনো বের করেননি কেন করেননি?
সুপ্রিম কোর্ট বলার পরেও এসএসসি যাতে কাঁচুমাচু মুখটা করে গিয়ে বলতে পারে যে দেখুন দেখুন আমরা তো লিস্টের উপরে তালিকার উপরে লিস্ট ওয়ান বলে এই তালিকাটা প্রকাশ করেছি। এরপরে আরও তালিকা আসবে। লিস্ট টু আমরা বের করব। আমাদের আরেকটু শুধু সময় লাগবে। আপনি যা বলছেন, আমরা তো আপনার কথা শুনেই এই লিস্টটা বের করে দিয়েছি এবার আমাদের আরেকটু সময় দেন আরও নাম আমরা বের করে দেব সময়টা শুধু চাই আরও সময় নেবে আরও বিষয়টাকে ঝোলাবে আরও জল ঘোলা করবে এই পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা একটা।
দু নম্বর যেটা এসএসসির তরফ থেকে চেষ্টা সেটা হচ্ছে দাগী যাদের নাম এই তালিকায় এসেছে তারা যাতে নিজেদের ইনসুলেট করতে পারে খানিকটা গা বাঁচিয়ে যাতে বেরিয়ে যেতে পারে এখান থেকে সেই চেষ্টা, আগেই বললাম তালিকায় ধরুন নাম রয়েছে এক্স ওয়াইজেড এর এবং তার পাশে রোল নম্বর সাধারণ একজন মানুষ তো রোল নম্বর দিয়ে তাকে চিনতে পারবেন না। কিন্তু সেই এক্স ওয়াইজেড তিনি মালদার না বীরভূমের না উত্তর দিনাজপুরের আপনি কিছুই বুঝতে পারছেন না। স্কুলের নামটা পর্যন্ত নেই। তাহলে আপনি ধরবেনটা কাকে গিয়ে। কাউকে শনাক্ত করে তাকে গিয়ে বলা হবে যে দাদা আপনি এইবার অন্তত বলে দিন যে টাকাটা কাকে দিয়েছেন? একটা অন্তত সত্যি কথা বলুন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ওই ব্যক্তি যাতে বলতে পারেন। আরে এটা যে আমি তুমি কি করে বুঝলে? এটা তো অমুক জায়গার কেউ হতে পারেন। এটা তো আমি নই। আমি নই। এই জায়গাটা করে যাতে তারা এড়িয়ে যেতে পারেন বেরিয়ে যেতে পারেন সেই রকম একটা চেষ্টা তাদের জন্য করা হচ্ছে সেরকম একটা পথ তাদের জন্য খুলে রাখা হয়েছে এবং তারই সঙ্গে দেখুন বারাসাতের একজন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ঈশা হক তার ছেলে নাজিবুল্লাহর নাম রয়েছে দাগীরের তালিকায় তিনি তেড়েফুরে এখন বলছেন যে আমার নাম কেন থাকবে আমি এই নিয়ে কোর্টে মামলা করতে যাব এবং তার যুক্তি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে তো বলে দেওয়া হয়েছে যে এসএসসির কাছে অরিজিনাল ওএমআরশিট নেই সেই কপি এসএসসির কাছে নেই তাহলে এই তালিকার বৈধতা কোথায় আমি সোমবারই হাইকোর্টে যাব। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। আমি এই নিয়ে মামলা করবো।
এখন যাদের নাম এই তালিকায় বেরিয়েছে তারা যদি আবার কোর্টে গিয়ে মামলা করে এবং সেই মামলা যদি গৃহীত হয় তাহলে আপনি ধরেই নিন যে এটা আরও কনক্লুলেটেড হবে। আরও জটিলতা তৈরি হবে এই নিয়ে এবং আরও জল ঘোলা করা হবে। আপনারা অনেকেই একটা ভিডিও সম্প্রতি দেখেছেন যেটা খুব ভাইরাল হয়েছে। জীবন কৃষ্ণ সাহাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যিনি এখন জেলের ভেতরে। তো সেই জীবন কৃষ্ণ সাহাকে কেউ টাকা দিয়েছিলেন। তিনি সেই ভিডিওতে জীবন কৃষ্ণ সাহার বাড়িতে চাইতে গেছেন টাকা এবং বলছেন যে আপনি যে টাকাটা নিয়েছেন অন্তত তার মধ্যে অর্ধেক টাকা আমাকে ফেরত দিয়ে দিন। জীবন কৃষ্ণ সাহা রাজার মত বসে আছেন এবং বলছেন কোথা থেকে পাবো আমি টাকা কি করে ফেরত দেব? তুমি যাও না গোটা বাড়ি খুঁজে নাও। যদি পাও টাকা নিয়ে চলে যাবে। এই যে একটা সেটেল করার জায়গা সেটাও তাদের জন্য খুলে রাখা হয়েছে তাদের সমস্ত ডিটেইলসটা না দিয়ে।
মানে শাসকদলের এরকম মনোভাব আর কি যে এইরকম একটা সেটেল করার জায়গাও যদি আমি রাখতে পারি তাহলে আমার অনেক দলের মানিক রত্ন তাদেরকে আমি বাঁচাতে পারবো লুকাতে পারবো। কিন্তু ব্যাপারটা হচ্ছে এখন এই যুগে দাঁড়িয়ে সংবাদ মাধ্যম বা নেট মাধ্যমের লোকজন যারা রয়েছেন তাদের হাত থেকে এই পরিচিতি লুকানোর যে ব্যাপারটা চেষ্টা করা হলেও সেটা একেবারেই প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। কারণ এই সমস্ত মানুষের কাছে আপনি একটা উল নিয়ে গেলেও তারা বলে দেবেন যে কোন সোয়েটার থেকে এই উলটা বেরিয়ে এসেছে তারা সেই রকম খোঁজার ক্ষমতা রাখেন এবং তার ফলেই এই তালিকায় যে সমস্ত নাম রয়েছে সেখান থেকে অসাধারণ কিছু নাম বেরিয়ে আসছে।
গর্বের বিষয় সেগুলো দেখে আপনার গর্বে বুক ফুলে যাবে, যেমন নির্মল ঘোষ তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষের পুত্রবধূ সম্পা ঘোষের নাম রয়েছে। এসএসসির তরফ থেকে প্রকাশ করা দাগীদের তালিকায় বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নির্মল ঘোষ। তিনিতো পুরনো চাল বহু জায়গায় বহু ঝামেলায় তার প্রচুর নাম জড়িয়েছে অভিযোগ উঠেছে আরজিকর কান্ডেও নানা রকম অভিযোগ তার বিরুদ্ধে উঠছিল নানা রকম ভাবে নাম জড়িয়েছিল, তো সেই শ্বশুর মশাইয়ের পুত্রবধূ সম্পা ঘোষ তার নাম রয়েছে এই তালিকায়। এবার নির্মল ঘোষ এ সম্পর্কে কি বলছেন, তিনি বলছেন যে এটা কে হতে পারে, কে হতে পারে না সেসব তো বিচার হবে, সত্য বেরিয়ে যাবে আমার কাছে তো এ নিয়ে কোন কাগজপত্র এখনো আসেনি কাগজপত্র এলেই আমি চেক করে বলতে পারবো।
ম্যাটারটা তো কোর্টে রয়েছে সেখান থেকেই সত্য বেরোবে। মানে তিনি চিনতেই পারছেন না যে এট কি আমার পুত্রবধুই সম্পা ঘোষ নাকি অন্য কেউ সেরকম একটা বিষয়। শ্বশুর মশাই এ কথা বলছেন শ্বশুর মশাই এক তো পুত্রবধু আরেক পুত্রবধু সম্পা ঘোষকে যখন এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে তিনি বলছেন আমি এই বিষয়টা নিয়ে এখন কোন কথাই বলবো না। মানে ব্যাপারটা এরকম যে তাকে প্রশ্ন করে কেন, তার নাম দাগিদের তালিকায় রয়েছে কেন। তিনি চাকরি চুরি করেছেন এই প্রশ্নটা করে তাকে অফেন্ড করা হয়েছে। মানে তার প্রতি অবিচার করা হচ্ছে এই প্রশ্নটা করে। এরপরে আপনি যেমন চলে আসুন আগেই বললাম চোপড়ার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কের মেয়ের নাম রয়েছে রোশনারা বেগম। তৃণমূল বিধায়কের নাম হামিদুল রহমান। তার মেয়ে রোশনারা বেগমের নাম রয়েছে এই দাগিদের তালিকায়।
এছাড়া রাজপুর সোনারপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের একজন কাউন্সিলর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কুহেলি ঘোষ তার নাম রয়েছে এবং তিনি আরও এক ধাপ ওপরে। তিনি একেবারে আকাশ থেকে পড়ছেন এটা শুনে যে তার নাম রয়েছে। আমার নাম কেন রয়েছে বলুন তো? মানে কুহেলি ঘোষ বলছেন যে দেখুন এই তালিকায় কেন আমার নাম রয়েছে আমি বলতে পারবো না। আমি এই নিয়ে আগেই মামলা করেছি। সিবিআইকে আমি চ্যালেঞ্জ করেছি।
কোনো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তারা আমাকে ডাকুক আমি এটা বলেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ ডাকেনি। তারপর শুনলাম যে অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং সেখানে দেখলাম আমার নাম রয়েছে। কেন রয়েছে আমি বলতে পারবো না। আমার কাছে এর কারণটা স্পষ্ট নয়। খুবই ধোঁয়াসা ভাই। খুবই ধোঁয়াসা। বোঝাই যাচ্ছে না কেন তার নামটা রয়েছে। এর সঙ্গে নাম রয়েছে পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। তার নাম তো থাকবেই। আপনারা জানেনই। এবার এই অঙ্কিতা অধিকারী। তিনি আবার মানে সবার থেকে উপরে বলতে হয় আর কি। এতটাই কান কাটা যে সম্প্রতি তাকে কোথায় দেখা গিয়েছিল জানেন? তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি ধিক্কার মিছিল করা হয়েছিল। সেই মিছিলের সামনে দেখা গিয়েছিল ট্যাং ট্যাং করে হাঁটছেন অঙ্কিতা অধিকারী।
মানে তিনি যাদের চাকরি খেয়েছেন তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। এই মিছিলে তিনি হাঁটছেন এবং কেন তিনি এই মিছিলে হাঁটছেন এই প্রশ্ন করা হলে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে উত্তর দেওয়া হচ্ছে যে বিজেপি এবং সিপিআইএম এর চক্রান্তে যোগ্যদের চাকরি গেছে সেই কারণে আমরা ধিক্কার মিছিল করছি এই যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক সেই মিছিল করছি তাই তিনি এই মিছিলে হেঁটেছেন। তালিকাটা যেভাবে বের করা হয়েছিল তার মাধ্যমে যেটুকু যা লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল সেটা একেবারেই করা যাচ্ছে না। আগের যে উদাহরণ দিলাম সেগুলো তো রয়েছে তার সঙ্গে আরও পশ্চিমবঙ্গ
রাজ্য সরকারের শাসকদলের নেতা-নেত্রী তাদের পরিবারের লোকজনের নামই দাগিদের তালিকায় রয়েছে।
যেমন হুগলির একজন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বিভাস মালিক তার নাম রয়েছে এই তালিকায় এবং তার স্ত্রীরও নাম রয়েছে মানে দুজনে মিলে চাকরি চুরি করেছেন। স্বামী স্ত্রী দুজনেরই নাম রয়েছে দাগি বা অযোগ্যদের তালিকায়। এছাড়া হুগলির আরেকজন তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা শাহিনা সুলতানা। তার নাম রয়েছে। আরেকজন দাপুটে নেতা নৈমুল হক তার স্ত্রী নমিতা আদকের নাম রয়েছে এই দাগিদের তালিকায়। হিঙ্গলগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রীর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা মন্ডলের নাম রয়েছে এই তালিকায় এবং তারই সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের জলচক অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি অজয় মাঝি তারও নাম রয়েছে এই দাগী বা অযোগ্যদের তালিকায়।
এখানেই শেষ নয় কবিতা বর্মন বলে একজনের নাম এখানে পাওয়া গেছে তিনি আবার একটু স্পেশাল তিনি আগে তৃণমূলে ছিলেন এখন
বিজেপিতে চলে গেছেন। এখন বিজেপিতে রয়েছেন অবশ্যই এখানে দেখার বিষয় যে এই নামটা সামনে আসার পরে এই কবিতা বর্মনের বিরুদ্ধে বিজেপির তরফ থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না। তাকে দল থেকে বের করা হয় কিনা, বহিষ্কার করা হয় কিনা, নাকি বিজেপি তাকে দলের মধ্যেই রেখে দেয়।
দেখুন এখানে একেবারে পুরো ফ্যামিলি এন্টারপ্রাইজ চলেছে দেখতে পাচ্ছেন কি সুন্দর শ্বশুর মশাই বৌমাকে মা মেয়েকে স্বামী স্ত্রীকে সুন্দর করে অকাতরে চাকরি বিলিয়ে গেছেন যোগ্যদের চাকরি। কিন্তু এরপরে কি এত কিছু সামনে এসেছে এত নাম সামনে এসেছে এরপর কি হবে সার্বিকভাবে কি বদলাবে এইটা তো এখানে সবথেকে বড় প্রশ্ন। দেখুন অপরাধের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো শাস্তি ক্রাইম একটা অপরাধ হয়েছে কোন একটা জিনিস সেটা অপরাধ আপনি সেটা কি করে বুঝবেন যখন আপনি জানেন যে সেই কাজটা করলে আপনাকে
আইন অনুযায়ী শাস্তি পেতে হবে একটা পানিশমেন্ট পেতে হবে।
আজ এইখানে এই দাগীদের নামের তালিকা প্রকাশ হলো এই যে অপরাধী যারা তাদের শাস্তিটা কি তাদের শাস্তি স্বরূপ বলা হয়েছিল যে এতদিন ধরে এরা যে এইভাবে চাকরি করেছে এইভাবে যোগ্যদের চাকরি খেয়েছে তার জন্য এতদিন তারা যে বেতন পেয়েছেন সেই সমস্ত টাকা পয়সা সরকারকে ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই টাকা পয়সা ফেরানোর কাজ আমাদের সরকার এখন এখনো পর্যন্ত শুরু করেনি সেই টাকা পয়সা নেবার ক্ষেত্রে আমাদের রাজ্য সরকারের বিন্দুমাত্র ছিটে ফোটাও কোন ইন্টারেস্ট নেই। এবং আরেকটা বিষয় কি এরা আর পরীক্ষায় বসতে পারবেন না আপনারা জানেন এই অযোগ্য দাগীদের তালিকায় নাম রয়েছে এরকম ১৪০০ জন নতুন যে পরীক্ষা হতে চলেছে সেখানে বসার জন্য অলরেডি ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন।
আর যদি এই তালিকাটা প্রকাশ করা না হতো এসএসসির তরফ থেকে ওই ১৪০০ জনকেও যে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হতো না তার গ্যারান্টিটা কোথায়? ওর মধ্যে থেকেও যারা পরীক্ষায় বসে পড়তেন কেউ না কেউ ঢুকে পড়তেন কয়েকজন ওই অযোগ্য দাগিদের তালিকায় নাম থাকার পরেও নতুন পরীক্ষাটা দিয়ে দিতেন। তারপর কি হতো এদের নিয়ে আবার একটা মামলা হতো যে এদের পরীক্ষা দেওয়ার কথা নয় দাগিদের তালিকায় নাম রয়েছে তারপরেও এদের পরীক্ষা দিতে দিয়েছে এসএসসি এই নিয়ে আবার একটা মামলা হতো আবার সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে বলা হতো বা যেকোনো আদালতের তরফ থেকে বলা হতো ও আচ্ছা আবার আপনারা এই অযোগ্যদের পরীক্ষা দিতে বসতে দিয়েছেন।
আবার গোটা প্যানেল বাতিল হয়ে যেত এবং আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চের উপরে উঠে বলতেন দেখেছেন তো আমি কিন্তু নতুন করে পরীক্ষা নিয়ে আবার চাকরি দিচ্ছিলাম। এই যে সিপিএম, এই যে বিজেপি এরা কিন্তু গিয়ে আবার মামলা করে গোটা বিষয়টাকে আটকে দিল। এরা মামলা করলো বলে আবার প্যানেল বাতিল হয়ে গেল। আপনার সরকার, আপনার এসএসসি, আপনার দল তারা যে এই অযোগ্যদের আবার পরীক্ষায় বসালো সেটা কিন্তু তখন কোন ম্যাটার হতো না। তখন আবার উনি বলতেন যে এদের জন্য আবার গোটা প্রক্রিয়াটা আটকে গেল।
অর্থাৎ আমাদের সরকার আমাদের শাসকদল যে দুর্নীতি বা অপরাধের সঙ্গে অতপ্রতভাবে জড়িত সেটার কোনো রকম কোনো সুরাহা করার বা সেখানে কোনো রকম শাস্তি দেবার কোন অভিপ্রায় তাদের ছিলও না নেই এরপরেও থাকবে না কোথাও যদি মনুষ্যত্ব কিছু বেঁচে থাকে এই যে দাগিদের নাম এই তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে এফআইআর করা উচিত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত তাদের আবার আদালত পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া উচিত কিন্তু এসব
রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি কিছু হবে কিনা আমাদের রাজ্যে আমরা সেসব কথা কিচ্ছু জানিনা।
এবং এইখানেই আসছে একদম প্রথমেই যেটা বলছিলাম এই তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে এসএসসির ওপর চালাকির তিনটে ধাপ এই হচ্ছে তৃতীয় ধাপ কলকাতা হাইকোর্টকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টকেও ঘোরানো হবে সুপ্রিম কোর্ট কত ধাক্কা দেবে কত ভৎসনা করবে কতবার বলবে যে তোমরা কেন কাজটা ঠিকমতো করতে পারছো না কতটা ধেতানি দেওয়া যায় এই আমাদের সরকারের একটা স্ট্র্যাটেজি প্রত্যেকটা বিষয় এটাকে এমন টানতে থাকো এটাকে হাঁপিয়ে দাও পিছিয়ে দাও এই জিনিসটা সবকিছুকে যেরকম ভাবে গ্রাস করেছে এটাকেও ঠিক সেইভাবেই গ্রাস করবে যেখানে আমরা এই রাজ্যের সাধারণ মানুষজন এখন এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছি আমরা চোখের সামনে দেখতে পাই অপরাধ হচ্ছে আমরা সেই অপরাধ নিয়ে দু তিন দিন কথাবার্তা বলি কিন্তু আমরা নিজেরাও আর এই আশাই রাখি না।
এখানে আদৌ কেউ কোনদিন শাস্তি পাবে কারোর শাস্তি হবে সেই আশাটাই আমরা রাখি না এবং এখানেও ঠিক সেই জায়গাতেই গোটা বিষয়টা চলে গেছে। এসএসসিকে দিয়ে এই একটা লিস্ট বার করাতে গিয়ে কি পরিমাণ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে সেটা সকলের সামনে রয়েছে। কিন্তু আর কত ধকানি দেয়া যায় এবং এইজন্যেই এই যে সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে না যে এই তালিকা সামনে এলো সেখানে শাসকদলের নেতা নেত্রী তাদের পরিবারের নাম রয়েছে এর মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস খুব বিব্রত শাসকদল বিড়ম্বনায় পড়ে গেছে। শাসকদলের কপালে ভাঁজ কিসের কপালে ভাঁজ কিসের বিব্রত হওয়া কিচ্ছু নেই তাদের বিন্দুমাত্র কোন লজ্জা নেই। নির্লজ্জতার উদাহরণ তারা বারবার সামনে রাখছেন এর পরেও তারা রাখবেন কোন চিন্তা তাদের নেই। দুদিন পরে তিরিংবিরিং করে এনারা আবার আসবেন মঞ্চের উপরে উঠবেন বড় বড় কথা বলবেন এখনো তারা বলতে শুরু করে দিয়েছেন এবং সেটাই চলতে থাকবে। অপরাধের যেখানে শাস্তি হয় না সেখানে অপরাধটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়।
এখন এই কেলেঙ্কারির ব্যাকগ্রাউন্ড একটু বিস্তারিত বলা যাক। ২০১৬ সালে West Bengal School Service Commission (WBSSC) শিক্ষক এবং নন-টিচিং স্টাফের জন্য রিক্রুটমেন্ট করেছিল। কিন্তু এতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া, ওএমআর শিট ম্যানিপুলেশন, অযোগ্য ক্যান্ডিডেটদের সিলেকশন—এসবের ফলে ক্যালকাটা হাইকোর্ট ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ২৫,৭৫৩টি অ্যাপয়েন্টমেন্ট ক্যান্সেল করে। সুপ্রিম কোর্ট ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে এই রুলিংকে উফহোল্ড করে, বলে যে গোটা প্রক্রিয়াটি ফ্রড এবং ম্যানিপুলেশনে ভর্তি, যা অপূরণীয়। চিফ জাস্টিস অফ ইন্ডিয়া বলেন, “এটি একটা কেস যেখানে গোটা সিলেকশন প্রক্রিয়া ভাইটিয়েটেড এবং টেইনটেড বিয়ন্ড রেজোলিউশন। লার্জ-স্কেল ম্যানিপুলেশন এবং ফ্রড, সঙ্গে কভার-আপের চেষ্টা, প্রক্রিয়াটিকে অপূরণীয় করে তুলেছে। প্রক্রিয়ার লিজিটিমেসি এবং ক্রেডিবিলিটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।”
এই স্ক্যামে TMC-এর প্রাক্তন মিনিস্টার পার্থ চ্যাটার্জি জড়িত, যিনি ক্যাশ সহ ধরা পড়েছেন এবং জেলে। মমতা ব্যানার্জির গভর্নমেন্টের অধীনে এই ফ্রড হয়েছে, যা হাজার হাজার যুবকের ক্যারিয়ার নষ্ট করেছে। সুপ্রিম কোর্ট ২০২৫ সালের আগস্টে আবার অর্ডার দেয় যে ইনেলিজিবল ক্যান্ডিডেটদের লিস্ট পাবলিশ করতে হবে। WBSSC-কে বলা হয় যে “নট অ সিঙ্গল টেইনটেড ক্যান্ডিডেট” নতুন রিক্রুটমেন্টে বসতে পারবে না। ৩০ আগস্ট ২০২৫-এ WBSSC ১৮০৪ ইনেলিজিবল ক্যান্ডিডেটসের লিস্ট পাবলিশ করে, যাতে রোল নম্বর, সিরিয়াল নম্বর এবং নাম আছে। এরা নতুন টিচার রিক্রুটমেন্টে বসতে পারবে না। এই লিস্ট প্রথমে ৩৩ পাতার, পরে আরও দুটো নাম যোগ। এতে TMC লিডারসের ফ্যামিলি মেম্বারসের নাম আছে, যা দুর্নীতির গভীরতা দেখায়।
উদাহরণস্বরূপ, পানিহাটির TMC বিধায়ক নির্মল ঘোষের পুত্রবধূ সম্পা ঘোষের নাম লিস্টে। নির্মল ঘোষ বলেন, “এটা কে হতে পারে কে হতে পারে না সেসব তো বিচার হবে, সত্য বেরিয়ে যাবে। আমার কাছে তো এ নিয়ে কোন কাগজপত্র এখনো আসেনি। কাগজপত্র এলেই আমি চেক করে বলতে পারবো। ম্যাটারটা তো কোর্টে রয়েছে, সেখান থেকেই সত্য বেরোবে।” মানে তিনি চিনতেই পারছেন না যে এটা তাঁর পুত্রবধূ কি না। সম্পা ঘোষ বলেন, “আমি এই বিষয়টা নিয়ে এখন কোন কথাই বলবো না।”
চোপড়ার TMC বিধায়ক হামিদুল রহমানের মেয়ে রোশনারা বেগমের নামও লিস্টে। রাজপুর সোনারপুরের TMC কাউন্সিলর কুহেলি ঘোষের নাম আছে, তিনি বলেন, “এই তালিকায় কেন আমার নাম রয়েছে আমি বলতে পারবো না। আমি এই নিয়ে আগেই মামলা করেছি। সিবিআইকে আমি চ্যালেঞ্জ করেছি। যেকোনো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তারা আমাকে ডাকুক আমি এটা বলেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ ডাকেনি।” পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম তো আছেই, এবং তিনি যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার মিছিলে হাঁটছেন। হুগলির TMC নেতা বিভাস মালিক এবং তাঁর স্ত্রীর নাম, শাহিনা সুলতানা, নৈমুল হকের স্ত্রী নমিতা আদক, হিঙ্গলগঞ্জের TMC সভানেত্রীর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা মন্ডল, পশ্চিম মেদিনীপুরের TMC অঞ্চল সভাপতি অজয় মাঝি, এবং কবিতা বর্মন (প্রাক্তন TMC, এখন BJP)। এই নামগুলো দেখে বোঝা যায় যে দুর্নীতি পার্টির উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে।
২০২৫ সালের ৩০ আগস্ট WBSSC লিস্ট পাবলিশ করে, যাতে ১৮০৪ নাম। এরা ২০১৬ SLST স্ক্যামে জড়িত, এবং নতুন রিক্রুটমেন্টে বসতে পারবে না। সুপ্রিম কোর্ট ২৮ আগস্ট ২০২৫-এ অর্ডার দেয় যে সাত দিনের মধ্যে লিস্ট পাবলিশ করতে হবে। কমিশন অ্যাশিওর করে যে “নট অ সিঙ্গল টেইনটেড ক্যান্ডিডেট” অংশ নেবে না। BJP-এর সুকান্ত মজুমদার বলেন, “প্রথমবার স্টেট গভর্নমেন্ট বডি অ্যাকসেপ্ট করেছে যে তারা জবস বেচেছে।” X-এ পোস্টস দেখে বোঝা যায় যে পাবলিক রিয়্যাকশন তীব্র, মমতা গভর্নমেন্টের সেটব্যাক বলা হচ্ছে। এক পোস্টে বলা হয়েছে, “
সুপ্রিম কোর্ট উফহোল্ড করে ক্যালকাটা HC-এর ডিসিশন, ২৫,০০০ জবস ক্যান্সেল।”
এই স্ক্যামের গভীরতা বোঝার জন্য দেখুন:
CBI এবং
ED-এর তদন্তে পার্থ চ্যাটার্জির বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। ২০২৫ সালের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট বলে, “ফ্রড পারপেট্রেটেড এবং পারপেটুয়েটেড ইজ ডিপ অ্যান্ড পারভেসিভ। এনি অ্যাটেম্পট টু সেগ্রিগেট দি গুড ফ্রম দি ব্যাড উড বি ফুটাইল।” এতে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি যায়, যাদের মধ্যে অনেক যোগ্য ক্যান্ডিডেটও ছিল, কিন্তু ফ্রডের কারণে গোটা প্রক্রিয়া ক্যান্সেল। নতুন রিক্রুটমেন্টের নোটিফিকেশন মে ২০২৫-এ ইস্যু হয়, কিন্তু মমতা ব্যানার্জি অ্যানাউন্স করেন যে WBSSC-এর মাধ্যমে হবে, যা গভর্নমেন্ট ওভাররিচ বলে ক্রিটিসাইজড।
এখন শাস্তির প্রশ্ন: এই অযোগ্যরা এতদিনের স্যালারি ফেরত দেবে কি? সরকার এখনও শুরু করেনি। এরা নতুন পরীক্ষায় বসতে পারবে না, কিন্তু ১৪০০ জন ফর্ম ফিল করেছে। যদি লিস্ট না বের হতো, তাহলে তারা বসতে পারত। এতে আবার মামলা হতো, প্যানেল ক্যান্সেল হতো, এবং ব্লেম বিজেপি-সিপিএম-এর উপর যেত। সরকারের স্ট্র্যাটেজি: ডিলে করা, জল ঘোলা করা। কিন্তু পাবলিকের বিশ্বাস হারিয়েছে। এই কেলেঙ্কারি যুবকদের ক্যারিয়ার নষ্ট করেছে, এবং শাস্তি না হলে অপরাধ অভ্যাস হয়ে যাবে। ২০২৫ সালের আগস্টে লিস্ট পাবলিশের পরও, TMC বিব্রত নয়, লজ্জা নেই। তারা মঞ্চে উঠে বড় কথা বলবে। কিন্তু সত্য বেরিয়ে আসছে, এবং জাস্টিস হওয়া দরকার।