পশ্চিমবঙ্গে SIR প্রক্রিয়া 2025: ভোটার, বিএলও ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে পূর্ণাঙ্গ গাইড

পশ্চিমবঙ্গে যখন এসআইআর শুরু হবে তখন কীভাবে এই এসআইআর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে এবং এই এসআইআর প্রক্রিয়াতে আপনি কীভাবে অংশগ্রহণ করবেন? এই এসআইআর প্রক্রিয়া যখন পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়ে যাবে, একটা সম্ভাব্য ডেট আপনাদেরকে বলে রাখি—খুব সম্ভবত পুজোর পরেই পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হবে। তার অফিশিয়াল অ্যানাউন্সমেন্ট হয়ে যাবে আর কিছুদিনের মধ্যে। 

যখনই এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হবে, তখন আপনি একজন ভোটার হিসেবে আপনার কী কী ডিউটি রয়েছে? আপনি কী করবেন? কীভাবে আপনি এসআইআর-এ অংশগ্রহণ করবেন? এই বিষয়ে এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনাদেরকে যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানাতে চলেছি। 
  1. এক নম্বরে বিএলও-দের ডিউটি কী থাকবে? এই এসআইআর প্রক্রিয়াতে বিএলও-রা কী ডিউটি পালন করবেন? 
  2. দু নম্বরে ভোটারদের কী কী করতে হবে? 
  3. তিন নম্বরে কোন কোন কাগজ আপনি দেখাবেন বা আপনি সঙ্গে রাখবেন? কোন কোন ডকুমেন্ট আপনি সঙ্গে রাখবেন? 
  4. চার নম্বরে কোন ভুলে আপনি এই এসআইআর থেকে ছিটকে যেতে পারেন বা বাদ পড়তে পারেন? 
  5. পাঁচ নম্বরে বিএলও যদি আপনার বাড়িতে কোন কারণে না পৌঁছায় বা না আসে, তাহলে আপনি কী করবেন? এবং 
  6. ছয় নম্বরে যদি আপনার বাড়ির কোন মেম্বার বা আপনি যদি বাইরে থাকেন—অন্য কোন রাজ্যে কিংবা বিদেশে যদি আপনি কাজ করতে থাকেন—তাহলে আপনি এই এসআইআর প্রক্রিয়াতে কীভাবে অংশগ্রহণ করবেন? এই কয়েকটি—এই ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করব এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে।
প্রথমে আপনাকে বলি, যখন এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে, তখন আপনার এলাকার যিনি সংশ্লিষ্ট বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) রয়েছেন, তিনি আপনার বাড়িতে এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে আপনার বাড়িতে পৌঁছবেন। এই ফর্মটি নিয়ে আপনার বাড়িতে বিএলও-রাই আপনার বাড়িতে পৌঁছবেন। আপনি একজন ভোটার হিসেবে কোথাও আপনাকে যেতে হবে না। এই এনুমারেশন ফর্মটা আপনাকে কোথাও থেকে কালেক্ট করতে হবে না। আপনি বাড়িতেই থাকবেন। আপনার বাড়িতে বিএলও-রা এই এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে আপনার বাড়িতে পৌঁছবেন। এবারে যখন বিএলও আপনার বাড়িতে পৌঁছবেন, তখন বিএলও-র সঙ্গে লেভেল এজেন্টরাও থাকতে পারেন। 

বুথ লেভেল এজেন্ট কারা? বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দ্বারা অ্যাপয়েন্টেড কিছু কর্মী বা এজেন্ট, যারা এই এসআইআর প্রক্রিয়াতে আপনাকে সহযোগিতা করবেন। তাঁরা কিন্তু বিএলও-দের সঙ্গে থাকতে পারেন। অতএব বিএলও একা নয়। বিএলও-র সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এজেন্টরাও থাকবেন। একজন করে অ্যাপয়েন্টেড এজেন্ট। অতএব বিএলও-রা ঠিকঠাক কাজ করছে কি না, সেটা দেখে নেবেন এই এজেন্টরাই। অতএব সে কারণে আপনার ভয়ের কোন কারণ নেই। আপনার যদি বিএলও-রা আপনার অপরিচিত কেউ হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার টেনশনের কোন কারণ নেই। কারণ আপনার এলাকার যিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এজেন্ট যিনি রয়েছেন, তাঁরাও কিন্তু বিএলও-র সঙ্গে থাকবেন। 

অতএব বিএলও-রা প্রথমে আপনার বাড়িতে এই এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে পৌঁছবেন। এই এনুমারেশন ফর্মটি কীভাবে ফিল আপ করতে হবে, তার সম্পূর্ণ গাইডলাইন, সম্পূর্ণ প্রসেস এবং পুরোটাই আপনাদেরকে বুঝিয়ে দেবেন বিএলও-রাই। অতএব আপনারা অনেকেই হয়তো এই এনুমারেশন ফর্মটা পাওয়ার পরে ফিল আপ করতে পারবেন না। আপনারা অনেকেই খুব স্বাভাবিকভাবে ভোটাররা সবাই পারবেন না। আপনার এটা বোঝার জন্য আপনাকে বিএলও-রা হেল্প করবেন এবং যারা বুথ লেভেল এজেন্টরা রয়েছেন, তাঁরাও হেল্প করবেন যে এই ফর্মটি আপনি কীভাবে ফিল আপ করবেন। তবে এই ফর্মের সঙ্গে বেশ কিছু ইনফরমেশন অলরেডি থাকবে। অতএব যে প্রিন্টেড ফর্মটা আপনাকে দেওয়া হবে, সেই ফর্মে বেশ কিছু তথ্য অটোমেটিকালি থাকবে প্রথম থেকে। শুধু কয়েকটি তথ্য আপনাকে দিতে হবে। সেটা কী কী দিতে হবে, সেটা কিন্তু ফর্মে উল্লেখ রয়েছে। 

কোন কোন তথ্য চাওয়া হবে সেই ফর্মের মাধ্যমে। অতএব এক নম্বরে বিএলও এবং বুথ লেভেল এজেন্ট যারা রয়েছেন, তাঁরা আপনার বাড়িতে পৌঁছলেন। ফর্মটা নিয়ে ফর্মে কী করতে হবে সবটা বুঝিয়ে দিলেন। দিয়ে উনারা কিন্তু চলে আসবেন। আপনাকে যে ইনস্ট্যান্ট সঙ্গে সঙ্গে ফিল আপ করে দিয়ে দিতে হবে, এমন কোন কথা নেই। যদি আপনি করতে পারেন করবেন, যদি না পারেন আপনার কাছে কিছুদিনের জন্য ফর্মটা থাকবেই। আপনি দুদিন চার দিন সময় নিতে পারেন। বিএলও-রা আপনার বাড়িতে দুদিন চার দিন পরে একটা ডেট আপনাকে দেবে। সেই ডেটে বিএলও-রা কিন্তু আপনার বাড়িতে আসবেন। এসে ওই ফর্মগুলি কালেক্ট করবেন যে ফর্মটা আপনাকে দিয়েছিল এবং যে ফর্মটা আপনি ফিল আপ করেছেন। এবারে আপনাদেরকে বলি যে এই ফর্ম ফিল আপ করার সময় যে ১১ খানা ডকুমেন্টের কথা ইলেকশন কমিশন অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেই ১১ খানা ডকুমেন্টের তালিকা নিচে দেওয়া আছে। 

যে ১১টি নথির কথা বলা হয়েছে সেগুলি হল—
  1. আপনি কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারি কর্মচারী বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী হলে আপনার সেই পরিচয়পত্র।
  2. আপনার নামে ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগের কোনও সরকারি (কেন্দ্র অথবা রাজ্য) নথি। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসি-র নথিও গ্রাহ্য।
  3. জন্মের শংসাপত্র।
  4. বৈধ পাসপোর্ট।
  5. যে কোনও বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া শিক্ষা সংক্রান্ত শংসাপত্র (যেখানে জন্মের সাল এবং তারিখের উল্লেখ রয়েছে)।
  6. সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্থায়ী বসবাসকারীর শংসাপত্র।
  7. তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত হলে তার শংসাপত্র।
  8. জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) তালিকায় নাম।
  9. বনাঞ্চলের অধিকারের শংসাপত্র।
  10. রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের তৈরি করা পারিবারিক ‘রেজিস্টার’।
  11. সরকার প্রদত্ত জমি বা বাড়ির নথি (দলিল, পর্চা ইত্যাদি)।
এই ১১ খানা ডকুমেন্টের মধ্যে যেকোনো একটি আপনাকে ওই ফর্মের সঙ্গে অথবা এনুমারেশন ফর্মের সঙ্গে অ্যাটাচ করতে হবে। যদি ১১ খানা ডকুমেন্টের মধ্যে কোনোটি না থাকে, আর যদি আপনার পশ্চিমবঙ্গে ২০০২ সালে যখন এসআইআর হয়েছিল, তার একটি ফাইনাল কপি প্রকাশিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যে ইলেক্টোরাল অফিসারের যে ওয়েবসাইট রয়েছে—চিফ ইলেক্টোরাল অফিসার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি এখনই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গে ২০০২ সালের এই এসআইআর হয়েছিল এবং তার ফাইনাল কপি। সেই ফাইনাল কপি বা ইলেক্টোরাল রোলে যদি আপনার নাম থেকে থাকে—২০০২ সালের ভোটার লিস্টে—তাহলে আপনি শুধু সেই পাতাটা আপনি অ্যাটাচ করবেন ওই ফর্মের সঙ্গে। 

অতএব ১১ খানা ডকুমেন্ট অথবা ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে যদি নাম থাকে, আপনি সেই নামটা অ্যাটাচ করবেন। যদি ১১ খানা ডকুমেন্ট না থাকে এবং ২০০২ সালের ভোটার লিস্টের তালিকাতে যদি আপনার নাম না থাকে, তখন আপনি শুধুমাত্র আপনার আধার কার্ড দিয়ে এই ফর্মটি পূরণ করতে পারবেন। অতএব এই আধার কার্ড দিয়ে যখন আপনি ফর্মটা পূরণ করলেন, তখন কিন্তু আপনাকে একটুখানি—মানে যেটা ওই ১১ খানা ডকুমেন্ট বা ২০০২ সালের ভোটার লিস্ট দিয়ে অ্যাপ্লাই করলে যেখানে আপনি একেবারে ১০০% সিওর হয়ে যেতে পারবেন যে আপনার কিন্তু ফাইনাল তালিকাতে নাম উঠছে এবং আপনি এসআইআর কোয়ালিফাই করলেন। 

শুধুমাত্র আধার কার্ড দিয়ে যদি আপনি এসআইআর-এ অংশগ্রহণ করেন, সেক্ষেত্রে আপনার আধার কার্ড যাচাই করা হবে, ভেরিফিকেশন করা যে আপনি সত্যিকারেরই ভারতের নাগরিক কি না এবং কত সাল থেকে আপনি ভারতে রয়েছেন—সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখা হবে। তারপরে কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবে ইলেকশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া। অতএব আধার কার্ড দিয়ে আপনি এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করতে পারেন, আধার কার্ড দিয়ে আপনি এনুমারেশন ফর্মটা পূরণ করে সাবমিট করতে পারবেন। তবে ফাইনাল তালিকায় নাম ওঠার ক্ষেত্রে কিন্তু বেশ কিছু ভেরিফিকেশন আপনার জন্য হবে, যারা শুধুমাত্র আধার কার্ড দিয়ে অ্যাপ্লাই করবেন।

এবারে আপনাদেরকে বলি যে আপনি এই সমস্ত ডকুমেন্ট দিয়ে আপনার ফর্মটি পূরণ করে আপনি আপনার কাছে রাখলেন। বিএলও-রা আপনার বাড়িতে পৌঁছলেন। আপনার বাড়ি থেকে সেই ফর্মটি কালেক্ট করবেন। কালেক্ট করার পরে বিএলও-দের ডিউটি সেই ফর্মটি এবং আপনি যে ডকুমেন্টটা দিয়েছেন, সেই ডকুমেন্টটা যে ইলেকশন কমিশনের যে অ্যাপস রয়েছে, সেই অ্যাপসের মাধ্যমে সেই ফর্মগুলিকে আপলোড করে দেওয়া—এটা বিএলও-দের কাজ। এটা বিএলও-রা করবেন। এটা ভোটারদের কাজ নয়। ভোটাররা শুধু ফর্ম পূরণ করে বিএলও-র হাতে তুলে দেবেন। 

এবারে আপনাদেরকে বলি, আপনাদের অনেকেই বলবেন যে আমাদের বাড়ির কোন মেম্বার ধরুন বাড়িতে নেই এবং ওই যে ফর্মটা এনুমারেশন ফর্মে তাঁর সিগনেচার করতে হবে। অতএব যে ভোটার তিনি সিগনেচার করবেন ওই ফর্মে। অতএব যদি আপনার বাড়ির কোন মেম্বার পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে যদি বিদেশে কিংবা অন্য কোন রাজ্যে তিনি যদি থাকেন, সেক্ষেত্রে তিনি সরাসরি বিএলও-র সঙ্গে কন্টাক্ট করে নিতে পারবেন এবং এই এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করার জন্য অনলাইন প্রসেস রয়েছে। তিনি যেখানেই কাজ করুক না কেন, তিনি সেখান থেকে অনলাইনে এনুমারেশন ফর্মটি পূরণ করতে পারবেন—তার প্রসেসও রয়েছে। অতএব তিনি যেহেতু বিদেশে কাজ করছেন, সেহেতু তিনি অনলাইনের মাধ্যমে যেখানেই থাকুক না কেন, তিনি সেখানে বসে কোনো একটা অনলাইন সাইবার ক্যাফে কিংবা নিজের মোবাইল থেকেও তিনি অনলাইনের মাধ্যমে অ্যাপ্লাই করতে পারবেন। আর তিনি যদি নিজে করতে না পারেন, কোনো একটা অনলাইন সাইবার ক্যাফে বা অনলাইন দোকানে গিয়ে তিনি অ্যাপ্লাই করতে পারবেন—সিএসসি সেন্টারগুলোতে গিয়ে। 

অতএব যারা বাড়িতে নেই, তারাও কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে বিএলও-র সাথে একটু কথা বলে জেনে নিয়ে তিনি কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে অ্যাপ্লাই করতে পারবেন। অতএব বাড়িতে না থাকলেই যে আপনি অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, এমন বিষয়টা কিন্তু নয়। এবারে আমি আপনাদেরকে যেটা বলব যে এই বিএলও-রা তাঁরা ফর্মটা কালেক্ট করলেন আপনার কাছ থেকে, অনলাইনেও তাঁরা আপলোড করে দিলেন। তাঁদের যদি কোথাও কোনো সন্দেহজনক জায়গা থাকে, তাঁরা কিন্তু তাঁদের যে সুপারভাইজার যিনি থাকবেন—বিএলও-র সুপারভাইজার যিনি থাকবেন—তাঁকে তাঁরা রিপোর্ট করবেন এবং সুপারভাইজারের হাত ধরে এটা ইলেকশন কমিশন অফ ইন্ডিয়ার কাছে সে রিপোর্ট পৌঁছবে এবং সেগুলোকে পরবর্তী সময় খতিয়ে দেখা হবে। 

যদি কোনো সন্দেহজনকভাবে কোনো কিছু ঘটনা থাকে বা কাউকে যদি সন্দেহ মনে করে বিএলও-রা তাঁরা এবং যারা বুথ লেভেল এজেন্টরা রয়েছেন, তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে বিএলও-রা কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি যদি এসআইআর-এ অংশগ্রহণ করে থাকে, তাঁর বিষয়ে তাঁরা কিন্তু রিপোর্ট করতে পারবেন। এবারে আমি আপনাদেরকে যেটা বলবো সেটা হচ্ছে যে এই এনুমারেশন ফর্মটি আপনি কীভাবে পূরণ করবেন এবং যে ১১টি ডকুমেন্ট লিস্টের কথা বলা হয়েছে ইলেকশন কমিশনের পক্ষ থেকে, সেই ১১ খানা লিস্ট কী কী—ডকুমেন্টের লিস্ট সেটা আমি আপনাদেরকে উপরের লিস্টে দেওয়া আছে। 

আপনাদেরকে অন স্ক্রিন এনুমারেশন ফর্মটি আমি আপনাদেরকে দেখাচ্ছি। দেখুন, অ্যানেক্সার সি: এনুমারেশন ফর্ম। এই ফর্মটিতে আপনাদের এখানে দেখুন—ইলেক্টরস নেম মানে আপনার নাম, একজন ভোটারের নাম—এটা কিন্তু অলরেডি প্রিন্টেড থাকবে। এখানে স্যাম্পেল কপিটা দেখাচ্ছি। কিন্তু আপনার কাছে যে ফর্মটি পৌঁছবে, সেই ফর্মে আপনার নাম, আপনার ভোটার কার্ডের যে নাম্বার এবং আপনার অ্যাড্রেস—এগুলো হচ্ছে এই যে লেখা রয়েছে প্রিন্টেড। এগুলো আগের থেকে লেখা থাকবে। এগুলো আপনাকে কিছু করতে হবে না। আপনার সিরিয়াল নাম্বার, পার্ট নাম্বার, এসি নাম্বার, পিসি নাম্বার, স্টেট—সবকিছুই প্রিন্টেড থাকবে। এবং আপনার ভোটার কার্ডের যে ছবিটা রয়েছে, সেই ছবিটাও এখানে প্রিন্টেড থাকবে। শুধুমাত্র আপনাকে একটি কারেন্ট ফটো—আপনার বর্তমান যে ফটো রয়েছে—সেই ফটোটা আপনাকে এখানে কিন্তু পেস্ট করতে হবে। 

এখানে যেটা লিখতে হবে—আপনি আপনার ডেট অফ বার্থ লিখবেন। আধার কার্ডের নাম্বার আপনি এখানে লিখবেন। যদিও অপশনাল রয়েছে। তবুও যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট থেকে আধার কার্ড নিয়ে একটা রায় দেওয়া হয়েছে। আধার কার্ড দিয়ে আপনি এসআইআর অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আধার কার্ডের নাম্বারটা এখানে হয়তো ওয়েস্ট বেঙ্গলে যখন চালু হবে, তখন এটা ম্যান্ডেটরি হয়ে যাবে। সো আপনি আধার কার্ডের নাম্বার লিখলেন, মোবাইল নাম্বার লিখলেন। আপনার গার্জেনের নাম, আপনার বাবা অথবা আপনি গার্জেন যাকে মনে করেন লিখলেন। আপনার তাঁর ভোটার কার্ডের নাম্বার লিখলেন। মায়ের নাম লিখলেন। মায়ের ভোটার কার্ডের নাম্বার লিখলেন। যদিও এটা ইফ অ্যাপ্লিকেবল লেখা রয়েছে। আপনি চাইলে লিখতে পারেন না চাইলে নাও লিখতে পারেন। আপনি যদি আপনার স্পাউজ নেম—অতএব আপনি যদি আপনার স্ত্রী কিংবা স্বামী থেকে থাকে—সেক্ষেত্রে এখানে তাঁর নাম এবং তাঁর ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার। জাস্ট এইটুকুই ফিল আপ করতে হবে। জাস্ট এইটুকুই। মানে ম্যাক্সিমাম এক মিনিটের কাজ রয়েছে এই ফর্মটা ফিল আপ করার জন্য। 

কিন্তু যেটা আপনাকে করতে হবে আগের থেকে যেটা আপনাকে ডকুমেন্ট রেডি করে রাখতে হবে। আপনার ডেট অফ বার্থ অনুযায়ী আপনাকে ডকুমেন্ট রেডি রাখতে হবে। 
  • যদি আপনার ডেট অফ বার্থ ১৭/০১/১৯৮৭-এর আগে হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনাকে ওই ১১ খানা যে ডকুমেন্ট লিস্ট বলা হয়েছে, সেই লিস্টের মধ্যে যেকোনো একটি অবশ্যই দিতে হবে অথবা ভোটার যদি আপনার ২০০২ সালের যে ভোটার লিস্ট রয়েছে, সেই লিস্টে যদি নাম থাকে, সেই কপিটাও আপনি দিতে পারেন অথবা বলা হচ্ছে যে এই ১১ খানা লিস্ট—সে ১১ খানা লিস্টের মধ্যে যেকোনো একটি ডকুমেন্ট আপনি দেখাবেন অথবা আপনি ভোটার যে ২০০২ সালের যে ভোটার লিস্ট প্রকাশিত হয়েছিল এসআইআর-এর, সেই পাতাটি আপনি এখানে অ্যাটাচ করবেন। 
  • এবারে দু নম্বরে বলা হচ্ছে যদি আপনার ডেট অফ বার্থ ১৭/০১/১৯৮৭-এর পরে এবং ২১/০১/২০০৪-এর আগে—অতএব এই ডেট অফ বার্থ থেকে এই ডেট অফ বার্থের মধ্যে যদি আপনার ডেট অফ বার্থ হয়ে থাকে—সেক্ষেত্রে আপনাকে কী করতে হবে? প্রোভাইড অ্যানি ডকুমেন্ট ফর সেলফ। অতএব নিজের জন্য একটি ডকুমেন্ট আপনাকে দিতে হবে। যেটা কিনা ওই ১১টি লিস্টের মধ্যে মেনশন করা রয়েছে। তার মধ্যে আপনি একটি দেবেন এবং আপনার ফাদার অর মাদার অথবা বাবা অথবা মায়ের যেকোনো একটি ডকুমেন্ট দিতে হবে। ওই ১১ খানা ডকুমেন্টের মধ্যে। আমি আবারও বলে দিচ্ছি যে ১১ খানা ডকুমেন্টের কথা বলা হচ্ছে। এটা বলে দেওয়ার পরে সেই এগজ্যাক্ট ডকুমেন্ট ছাড়াও আপনি যেকোনো ১১টি ডকুমেন্ট ছাড়া আপনি ২০০২ সালের ভোটার লিস্টটি দেখাতে পারেন অথবা ভোটার লিস্ট যদি আপনি দেখান, আর আপনাকে কোনো কিছু দেখাতে হবে না। 
  • তিন নম্বরে বলা হচ্ছে যদি আপনার ডেট অফ বার্থ ২১/০১/২০০৪-এর পরে হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার নিজের একটি ডকুমেন্ট আপনাকে তো দিতেই হবে। ১১ খানার মধ্যে যেকোনো একটি দিতে হবে। বাবা এবং মা উভয়েরই ডকুমেন্ট দিতে হবে। ওই ১১ খানার মধ্যে দিতে হবে। আর যদি বাবা-মা ইন্ডিয়ার বাইরের হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে ধরুন আপনি ভারতীয় কিন্তু আপনার বাবা-মা ভারতীয় নয়। এমনটা যদি হয়ে থাকে, তাহলে আপনার বাবা-মা এই ইন্ডিয়াতে এসেই আপনার জন্মগ্রহণ হয়েছিল। আপনার বাবা-মা ইন্ডিয়াতে এসে আপনার জন্ম হয়েছে, তখন আপনাকে আপনার বাবা-মায়ের তৎকালীন সময়ের যে পাসপোর্ট এবং লিগ্যাল ভিসা রয়েছে, তার কপি দিতে হবে। 
এই সমস্ত কেসগুলো খুবই কম থাকবে। এগুলো নিয়ে ডিটেইলসে আমি বেশি লিখছি না। তবে মূলত যে তিনটে বিষয় ডেট অফ বার্থ ধরে বললাম, এগুলো হচ্ছে মেইন বিষয়। এবারে আমি আপনাদেরকে যেটা বলব সেটা হচ্ছে যে ১১টি ডকুমেন্টের লিস্ট দেখুন। এখানে যে ১১টি ডকুমেন্টের লিস্ট দেওয়া হয়েছে—
  • প্রথমে বলা হচ্ছে যে অ্যানি আইডেন্টিটি কার্ড, পেনশন পেমেন্ট অর্ডার ইস্যুড টু রেগুলার এমপ্লয়ী পেনশনার—অ্যানি সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট, স্টেট গভর্নমেন্ট, পিএসইউ। অতএব আপনি যদি কোনো সরকারি পেনশন হোল্ডার হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার পেনশনের কাগজপত্র আপনি দেখাবেন যে আপনি সরকারি চাকরি করতেন—সেটা স্টেট গভর্নমেন্ট কিংবা সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট যাই হোক—আপনি করতেন এবং তার কাগজ রয়েছে, সেটা দেখালেই আপনার হয়ে যাবে আর কিছু লাগবে না। 
  • দু নম্বরে যদি আপনার আইডেন্টিটি কার্ড থাকে, সার্টিফিকেট থাকে, ডকুমেন্ট থাকে—ইস্যুড বাই গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া, গভর্নমেন্ট অথবা লোকাল অথরিটি, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসি, পিএসইউ—পিরিয়ড ১৭/০১/১৯৮৭ অথবা ১৭/০১/১৯৮৭-এর আগের যদি আপনার এই ডকুমেন্টসগুলো যদি থেকে থাকে—ধরুন ব্যাঙ্কের বই ১৭/০১/১৯৮৭-এর আগে, পোস্ট অফিসের বই, এলআইসি কিংবা কোনো গভর্নমেন্ট সার্টিফিকেট, লোকাল অথরিটি কিংবা সেন্ট্রাল গভর্নমেন্টের কোনো সার্টিফিকেট যদি আপনার যে আপনি এখানকার বাসিন্দা হিসেবে বা এখানকার মানুষ—সেই সংক্রান্ত যদি কোনো সার্টিফিকেট থাকে এবং সেটা অবশ্যই ১৭/০১/১৯৮৭-এর আগের হতে হবে—তাহলে আপনি এটা দিয়ে করতে পারবেন। 
  • তিন নম্বরে যদি আপনার বার্থ সার্টিফিকেট থাকে—এখানে কিন্তু আর কোনো ডেট মেনশন নেই। আপনার যেকোনো দিনের আপনার বার্থ সার্টিফিকেট থাকলেই হবে। কোনো সালের আগে-পরে এমনটা কিন্তু মেনশন নেই। শুধু যদি বার্থ সার্টিফিকেট থাকে তাহলেই হবে। 
  • পাসপোর্ট যদি থাকে তাহলেই হবে। 
  • যদি আপনার মাধ্যমিক পাস সার্টিফিকেট কিংবা হায়ার এডুকেশনাল কোনো সার্টিফিকেট থেকে থাকে—কোনো বোর্ড কিংবা ইউনিভার্সিটির—সেটা থাকলে হবে। 
  • পারমানেন্ট রেসিডেনশিয়াল সার্টিফিকেট ইস্যুড বাই কম্পিটেন্ট অথরিটি। যদি কোনো আপনার স্থায়ী বাসিন্দা সার্টিফিকেট থেকে থাকে—সরকারি কোনো সার্টিফিকেট যদি আপনার থেকে থাকে—পারমানেন্ট রেসিডেনশিয়াল সার্টিফিকেট সেটা হবে। এবং 
  • আপনার যদি ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট—যে বন বিভাগের সার্টিফিকেট হয়—এরকম যদি আপনার কিছু থেকে থাকে। কিংবা 
  • আপনার যদি কাস্ট সার্টিফিকেট থেকে থাকে—ওবিসি, এসসি, এসটি এ ধরনের কাস্ট সার্টিফিকেট যদি থাকে—শুধু সেটা দিলেই হবে। 
  • ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন—যেটাকে এনআরসি বলা হচ্ছে—এনআরসির যদি কোনো সার্টিফিকেট থাকে, ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন যদি থাকে, সেটা দিলে হবে। 
  • ১০নং হচ্ছে ফ্যামিলি রেজিস্টার—ফ্যামিলি রেজিস্টার যদি কোনো থেকে থাকে এবং সেটা স্টেট এবং লোকাল অথরিটির হতে হবে। 
  • এবং অ্যানি ল্যান্ড—যেকোনো জমি জমির কাগজপত্র যদি আপনার দলিল বা রেকর্ড থাকে বা হাউস অ্যালটমেন্ট যদি সার্টিফিকেট থাকে বাই গভর্নমেন্ট এবং গভর্নমেন্ট থেকে দেওয়া গভর্নমেন্টের দেওয়া যদি কোনো ল্যান্ড রেকর্ড যদি থেকে থাকে—সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনি এই এসআইআর-এ আপনি অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং আপনি কোয়ালিফাই করবেন। এই ১১টি ডকুমেন্টের কথা বলা হচ্ছে। 
  • যদিও সুপ্রিম কোর্ট এখন ১২ নম্বর নথি হিসেবে আধার কার্ডকে মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, কিন্তু একটি কথা পরিষ্কার করে বলাও হয়েছে যে আধার কার্ড দিয়ে আপনি যদি ১১টির মধ্যে কোনোটি না থাকে। আধার কার্ড দিয়ে আপনি অ্যাপ্লাই করুন। আপনার অ্যাপ্লিকেশন গ্রহণ করা হবে। কিন্তু সেটা পরবর্তীকালে খতিয়ে দেখা হবে যে আধার কার্ডটা লিগ্যাল কি না। কারণ অনেক ফেক আধার কার্ড রয়েছে, ভুয়ো আধার কার্ড রয়েছে—সে কারণে এমন কিন্তু নির্দেশিকাও রয়েছে। 
অতএব এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে কীভাবে এসআইআর পশ্চিমবঙ্গে হবে, পশ্চিমবঙ্গে যখন শুরু হবে—এজ এ ভোটার হিসেবে আপনার কী করণীয়, বিএলও-দের কী করতে হবে, কোন ডকুমেন্টস আপনি রাখবেন, কোনটা থাকলে আপনার সুবিধে এবং কী কী ডকুমেন্টস রাখতে হবে এবং ফর্মটি আপনি কীভাবে ফিল আপ করবেন—সমস্ত কিছু এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানালাম। পুজোর পরেই পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর-এর ঘোষণা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু প্রবল রয়েছে। কারণ সমস্ত রকমের প্রস্তুতি পর্ব চলছে। যেকোনো মুহূর্তে কিন্তু একটা ঘোষণা হয়ে যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর শুরু হওয়া নিয়ে। অতএব ধন্যবাদ আপনারা প্রত্যেকে সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন, অপেক্ষা করুন। পরবর্তী প্রতিবেদনের জন্য এইরকম গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে অবশ্যই সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। ধন্যবাদ।
পরবর্তী পোস্ট পূর্বের পোস্ট
No Comment
Add Comment
comment url